বিকেএম নুরুল কাইছার :

আমরা বাঙালি। আমাদের ঐতিহ্যে গাঁথা এ দেশ নানা বৈচিত্র্যময়। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে প্রকৃতির সাথে নিবিড় অঙ্গ মিলন নতুন নয়।বাংলা বারো মাসের দস্যি ফাল্গুন-চৈত্র দুটো মাস ঋতুরাজ বসন্ত। কত কবি,কত সাহিত্যিক,কত ষোড়শী যৌবনা,কত যুবক,কত বৃদ্ধা বনিতা ব্যাকুল হৃদয়ে বসে থাকে এই ঋতুকে বরণ করে নিতে।হৃদয়ে আজি নব ফুলের সমারোহের গন্ধ কল্পিত হচ্ছে ,কেমন হবে এই বসন্ত?আম্র কাননে অবাক চাহনিতে চেয়ে আছে কবে আসবে মনোহারিণী সেই গন্ধভরা মুকুল?দখিনা হাওয়ায় কখন যে দোলবে সোনার ধানের পাতা,কবে ফুটবে প্রাণের পছন্দের টুকটুকে গোলাপ?বসন্ত মানে আমাদের ঐতিহ্যগত কোকিলের আনাগোনা। বসন্তের আগমন হলো ধরাতলে প্রাণে প্রাণে লাগিল দোলা,কেটে গেল হাড় কাঁপানো শীতের তীব্রতা। ষড়ঋতুর রাজকে বরণ করে নিল বাঙালি জাতি। কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি,জেলে,কামার,কুমোর, রাখাল ভাইদের কন্ঠে সুরের মূর্ছনায় উঠল রবি ঠাকুরের “আজি এই বসন্তে কত ফুল ফোটে কত বাঁশি বাজে”।
শিমুল,বকুল,পাপিয়া,কৃষ্ণচূড়ায় নতুন পাতা গজে সবুজের ঝিলিকের ঝুলি টইটম্বুর।এই ফাগুনের বিচিত্র সবুজের আগুনে কাঁদছে কত রত্নাগর্ভা শহীদ জননী রফিক,শফিক,সালাম,জাব্বার,বরকতের মা।আমরা মাতৃভাষাকে লালন করতে গিয়ে হারিয়েছি বাংলার সূর্য সন্তানদের।তবে আমাদের দিনটি স্মরণ করতে হয় ভিনদেশী শব্দের বদলে।আমরা কি পারি না আমাদের এই ষড়ঋতুর ৮ই ফাল্গুন “শহীদদিবস ” কথাটি লিখতে?তাহলে কি বাঙালি জাতির ঐতিহ্য ইতিহাস ভূলুণ্ঠিত হবে?তবু বলি ফাগুন আমাদের অহংকার,ঐতিহ্য,ইতিহাসের পাতায় লেখা ভাষার জন্য শহীদের মাস।
আজ এই বসন্তের শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণীয় স্মরণীয় করে নিলাম। সবাইকে আবারো বসন্তের শুভেচ্ছা।

বিকেএম নুরুল কাইছার ,প্রভাষক ,ডুলাহাজারা ডিগ্রি কলেজ,চকরিয়া, কক্সবাজার।